সংকট কাটছে না খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট)। গত ৪ মে থেকে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সপ্তম কর্মদিবসেও ক্লাসে পাঠদানে ফেরেননি শিক্ষকরা। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৭ শিক্ষার্থীকে শোকজ করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৩ মে) দুপুরে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে এরপর প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
এ সময় ‘হামলা-মামলা-বহিষ্কার, মানি না মানবো না’, ‘প্রহসনের তদন্ত, মানি না মানবো না’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেবো না’, ‘আমার ভাইয়ের আন্দোলন, বৃথা যেতে দেবো না’, ‘গোলামি না আজাদি, আজাদি আজাদি’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’সহ নানা স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে এমন পরিস্থিতিতে উভয় সংকটে পড়েছে কুয়েট কর্তৃপক্ষ। শিক্ষকদেরকে ক্লাসে ফেরাতে গেলে দায়ী শিক্ষার্থীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। আবার শাস্তি দিতে গেলে আন্দোলন হচ্ছে। এ অবস্থায় প্রায় তিন মাস ধরে চলা অচলাবস্থা কাটাতে পারছে না কর্তৃপক্ষ।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করা হয়েছিল, সেই হামলাকারীদের এখনও কোনো শাস্তি হয়নি। অথচ সাধারণ শিক্ষার্থীরা শাস্তির মুখোমুখি হতে যাচ্ছে। যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। এরই মধ্যে শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে সোমবার ৩৭ শিক্ষার্থীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় কুয়েট কর্তৃপক্ষ। আগামী ১৫ মে বিকেল ৫টার মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়। তবে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তা ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন শিক্ষার্থীরা।
কুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. সাহিদুল ইসলাম বলেন, শিক্ষকদের লাঞ্চিতকারী শিক্ষার্থীদের শাস্তি কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষকরা ক্লাস-পরীক্ষা নেবেন না। আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে শাস্তি কার্যকর করা না হলে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন থেকেও বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শিক্ষকরা।
কুয়েটের ছাত্র কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ ইলিয়াছ আক্তার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় তদন্ত কমিটির অবজারভেশন অনুযায়ী যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল তাদের সবাইকে শোকজ দেওয়া হয়েছে। এখন তারা জবাব দেবে। তারা যদি তাদের স্বপক্ষে প্রমাণাদি দেখাতে পারে তাহলে তারা শাস্তি পাবে না, যদি না দেখাতে পারে তাহলে হয়তো কেউ শাস্তি পাবে। সোমবার শিক্ষকদের লাঞ্ছনার বিচার চেয়ে মানববন্ধন করেছিলেন শিক্ষার্থীরা। তারা দ্রুত বিচারকার্য শেষ করে ক্লাসে ফিরতে চান। আমাদের শিক্ষকরাও চান বিচারকার্য শেষ হলে ক্লাসে ফিরতে।
খুলনা গেজেট/এমএম